"পিএইচডি প্রায় শেষ করে ফেলেছি, এরপর কী হবে?"

"পিএইচডি প্রায় শেষ করে ফেলেছি, এরপর কী হবে?"

ডিসেম্বর ২৬, বৃহস্পতিবার, ২০১৯

ডিপার্টমেন্টের জুনিয়র, আশীষ চন্দের সাথে একটা কাজে দেখা করতে গিয়েছিলাম। আশীষ ফিলাডেলফিয়ার টেম্পল ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি করছে।  কথা প্রসঙ্গে বলছিলো যে আমার ব্লগ পোস্টগুলা নাকি ও পড়ে।  আমিও বললাম যে, আমার এই ব্লগ লেখার পেছনে ওর ভূমিকা আছে।  শুরুতে Google Doc -এ নোট আকারে লিখে রাখতাম। আশীষ বলার পরেই ব্লগ পোস্ট আকারে লেখা শুরু করেছিলাম। আশীষ বলছিলো আমেরিকায় পিএইচডি করতে আসার আগে কিভাবে SOP লিখতে হয়, কিভাবে এপ্লাই করতে হয়, GRE /TOEFL স্কোর কেমন হওয়া লাগে -  ইত্যাদি নিয়ে অনেক জায়গায়ই বেশ লেখালেখি আছে, কিন্তু পিএইচডি শেষের দিকে কিংবা শেষ করার পর কিভাবে চাকরি খুঁজতে হবে, ভিসার ব্যাপার-স্যাপার কী - ইত্যাদি নিয়ে লেখা ওর চোখে পড়ে নাই। আমি লিখছিনা কেন - সেটাও জিজ্ঞেস করলো। ওর সাথে এসব নিয়ে অনেকক্ষন আলাপ করলাম, ভাবলাম নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে লিখেই ফেলি একটা ব্লগ পোস্ট।

সিম্পল ফ্যাক্টরি, ফ্যাক্টরি মেথড আর অ্যাবস্ট্রাক্ট ফ্যাক্টরি ডিসাইন প্যাটার্ন

অক্টোবর ১২, শনিবার লেখা শুরু করে আজকে নভেম্বর ৭, বৃহস্পতিবার।

যেকোনো ডিসাইন প্যাটার্ন বোঝার জন্য সেটা কী সমস্যার সমাধান করে সেটা খুব ভালো করে বোঝা জরুরি।

চলুন একটা কাল্পনিক ঘটনা বা গল্পের মাধ্যমে আজকের ডিসাইন প্যাটার্ন গুলোর উপযোগিতা বোঝার চেষ্টা করি।তার আগে বলে নেই: পুরো আইডিয়া আর কোড "Head First Design Patterns" বই থেকে নিয়ে আমি আমার মতো কিছু পরিবর্তন করে নিয়েছি। সুতরাং পুরো ক্রেডিটটাই ওই বইয়ের লেখকদের প্রাপ্য। আর লেখাটা একটু লম্বা, তাই ধৈর্য ধরে, সময় নিয়ে পড়ার অনুরোধ থাকলো।

পুরো সিম্পল ফ্যাক্টরির কোড, টেস্ট ড্রাইভ কোড সহ এই Repl.it লিংকে দিয়ে দিয়েছি। আর পুরো ফ্যাক্টরি মেথড ডিসাইন প্যাটার্নের কোড, টেস্ট ড্রাইভ কোড সহ এই Repl.it লিংকে দিয়ে দিয়েছি, দেখে নিতে পারেন। রেডি?

অবজার্ভার ডিসাইন প্যাটার্ন (Observer Design Pattern)

অবজার্ভার ডিসাইন প্যাটার্ন (Observer Design Pattern)
মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯। 

যেকোনো ডিসাইন প্যাটার্ন বোঝার জন্য সেটা কী সমস্যার সমাধান করে সেটা খুব ভালো করে বোঝা জরুরি।

ব্যারিস্টার সুমন অনেকদিন থেকেই নাগরিক বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে খুব ফেইসবুক লাইভ করছেন। ধরা যাক, আপনি উনার সাংঘাতিক বড় একজন ফ্যান। উনার ফেইসবুক পেইজে "লাইক" দিয়ে রাখলেন। এখন যখনই ব্যারিস্টার সুমন লাইভে আসেন, আপনি সাথে সাথেই আপনার ফেসবুকে একটা নোটিফিকেশন পান। সেই নোটিফিকেশনে ক্লিক করলে উনার পেইজে গিয়ে পুরো ভিডিওটা তখনই দেখতে পারেন।

ফগ কম্পিউটিং (Fog Computing) - সেটা আবার কী?

ফগ কম্পিউটিং (Fog Computing) - সেটা আবার কী?
২৯ জুলাই, সোমবার, ২০১৯


ক্লাউড কম্পিউটিং (Cloud Computing)  সম্পর্কে কম-বেশি কিছু শুনেছিলাম। কিছু ধারণাও হয়েছিল কিন্তু ফগ বা "কুয়াশা" কম্পিউটিং সম্পর্কে একেবারেই নতুন করে শুনলাম, জানলাম। আর সেটা শেয়ার করার জন্যই লিখছি। বরাবরের মতো প্রথমেই বলে নিচ্ছি, আমি এ ব্যাপারে মোটেও কোনো এক্সপার্ট না। শুধু একটা রিসার্চ পেপারে কিছু কাজ করার সুবাদে একটু শেখা, জানা হয়েছে - আর সেটাই শেয়ার করছি, হয়তো কারো উপকারে আসবে।

ICSE 2019 - ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং, মন্ট্রিয়েল, ক্যানাডা

ICSE 2019  - ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং, মন্ট্রিয়েল, ক্যানাডা
জুন ৩, সোমবার, ২০১৯।


এ বছর ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং (International Conference on Software Engineering সংক্ষেপে ICSE  - উচ্চারণ 'ইকসি ') -র ৪১তম আসর অনুষ্ঠিত হলো ক্যানাডার মন্ট্রিয়াল শহরে। শিক্ষক হিসাবে এই প্রথম গেলাম। আগে পিএইচডি ছাত্র হিসাবে প্রফেসরের সাথে একটা ছোট পেপার আর পোস্টার প্রেসেন্ট করতে ২০১০ -এ গিয়েছিলাম সাউথ আফ্রিকার কেপ টাউন শহরে। এইবার শুধু এটেন্ড করতে গিয়েছি, কোনো পেপার বা পোস্টার প্রেসেন্ট করতে না। সাথে প্রফেসরও নাই, সেইজন্যই বোধহয় খুব হালকা মেজাজে ছিলাম। খুব ভালো লেগেছে। নতুন অনেক কিছু শিখলাম, নেটওয়ার্কিং হলো - আর এইসব কিছু ব্যাপার শেয়ার করার জন্যই লিখছি।

কম্পোসিট ডিসাইন প্যাটার্ন (Composite Design Pattern)

কম্পোসিট ডিসাইন প্যাটার্ন (Composite Design Pattern)
১০ মে শুক্রবার, ২০১৯


সফটওয়্যার ডিসাইন প্যাটার্নের উপর একটা কোর্স পড়াবো এই অগাস্টে। কোনোকিছু পড়াতে গেলেই বোধহয় ভালোভাবে শেখা হয়। নতুন করে আবার শিখছি বলেই আসলে আজকে লিখতে বসেছি। Coursera -তে ডিসাইন প্যাটার্নের উপরে একটা কোর্স আছে, কানাডার  ইউনিভার্সিটি অফ আলবার্টা-র প্রফেসর Kenny Wong -এর কোর্স। বেশ ভালো একটা কোর্স। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে, কোর্সটা উনি নিজে পড়াচ্ছেন না! এক অভিনেত্রীকে দিয়ে পড়াচ্ছেন! অভিনেত্রী তার সুন্দর উচ্চারণ, বাচনভঙ্গি দিয়ে ভালোই প্রক্সি দিয়ে পড়িয়ে যাচ্ছেন! 

যাই হোক, কম্পোসিট ডিসাইন প্যাটার্নের আজকের লেখাটা এই কোর্স থেকেই নেয়া। আমি শুধু আমার নিজের মতো করে লিখে রাখছি নোট করে রাখার জন্যই। ভুলভ্রান্তি থাকলে ধরিয়ে দেয়ার অনুরোধ থাকলো।  

সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের কিছু বিখ্যাত সূত্র - মনে রাখার সহজ উপায়


সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের কিছু বিখ্যাত সূত্র - মনে রাখার সহজ উপায়
"আজ রবিবার" - মার্চ ১০, ২০১৯: [উত্তর: ১৫-২১-৩৩-৪১১-৫২-৬৪-৭৮-৮১০-৯৯-১০৭-১১৬]

কিছুদিন আগে হটাৎ করেই একটা ওয়েবসাইটের খোঁজ পেলাম। টিম সোমার (Tim Sommer) নামের এক ভদ্রলোকের লেখা ব্লগ - Famous Laws of Software Development, অর্থাৎ: সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের কিছু বিখ্যাত সূত্র। পড়লাম, তারপর অতি উৎসাহে ফেসবুকে শেয়ার করলাম। কিন্তু দুইদিন পরে ভেবে দেখি একটা সূত্রও মনে নাই। এমন কি সূত্র গুলোর লিস্ট যখন আবার দেখলাম, কোন সূত্র যে কী - সেটাও মনে করতে পারলাম না। ভাবছিলাম মনে রাখার উপায় কী? মুখস্থ করে ফেলবো?

আমেরিকায় উচ্চ শিক্ষায় আসার জন্য যত বাধা (?!)

আমেরিকায় উচ্চ শিক্ষায় আসার জন্য যত বাধা (?!)
১১ ফেব্রুয়ারি, সোমবার ২০১৯

[ডিসক্লেইমার - এই পোস্ট সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং -এর সাথে কোনোভাবেই সম্পৃক্ত না।]

আমার ব্লগ লেখালেখির পেছনে ডিপার্টমেন্টের জুনিয়ারদের অনেক ভূমিকা। কেউ বিশ্বাস করবে কিনা জানি না, জুনিয়ারদের সাথে আমার সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্টের এক্সপেরিয়েন্স শেয়ার করার জন্যই ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে প্রথম লিখি।আমি আক্ষরিক অর্থেই সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট শূন্য থেকে শুরু করেছি। তাই নতুন কিছু শিখলে শেয়ার করার লোভ সামলাতে পারতাম না। প্রথমদিকে গুগল ডক-এ লিখে ডিপার্টমেন্টের ফেইসবুক পেজে তার লিংক শেয়ার করতাম।সবার লাইক আর কমেন্টে খুব উৎসাহ পেতাম (এখনো পাই)।  আশীষ চন্দের (এখন টেম্পল ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি করছে) পরামর্শে লেখাগুলোকে একটা ব্লগে পোস্ট আকারে পাবলিশ শুরু করি কিছুদিন পর। কায়সার সাবরিনের (এখন লিংকড-ইনে কাজ করছে) পরামর্শে ব্লগের নাম ঠিক করি। তারপর আসলে মাঝে মাঝে পোস্ট দিতাম - শুধুই ডিপার্টমেন্টের ফেইসবুক পেজে।  নিজের ফেসবুকে (হয়তো একবার ছাড়া) কখনোই কোনো পোস্ট শেয়ার করেছি বলে মনে পড়ে না। কিছুটা সংকোচ, অস্বস্থিবোধ, "লোক দেখানো হয়ে যাবে"  - এসব ভেবেই কখনো শেয়ার করি নাই। এই কিছুদিন হলো আহমেদ শামীম হাসান শাওনের (এখন 'পাঠাও' - এ কাজ করেছে) উৎসাহে ব্লগ পোস্ট গুলো নিজের ব্লগে পোস্ট করার পাশাপাশি Medium -এর প্রোগ্রামিং পাতা - তে শেয়ার করা শুরু করি।  ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে শুরু করে ১০০, ২০০ করে এখন আমার এই ব্লগের হিট সংখ্যা ২২ হাজারের উপর! পাঠকদের অনেক ধন্যবাদ!

আজকের লেখাও আরেক জুনিয়রের ক্রেডিট।  একরাম হোসেনে, এই কিছুদিন হলো পিএইচডি করতে ইউনিভার্সিটি অফ লুইজিয়ানা এট লাফায়েত -এ এসেছে। তার সাথে সেদিন ফোনে আলাপ করছিলাম। অনেক কথার মাঝে এক পর্যায়ে সে বলছিলো ডিপার্টমেন্টে অনেক জুনিয়রই আছে যাদের অনেক পটেনশিয়াল! শুধু একটু উৎসাহ আর দিক নির্দেশনার অভাবের কারণেই ওরা বাইরে (বিশেষ করে আমেরিকায়) পড়তে আসতে সাহস করে না। "ভাই, আপনি তো গ্রুপে পোস্ট-টোস্ট দেন, এই বিষয়ে একটা কিছু লিখবেন।"

কী লিখবো ভাবছিলাম। ২০০৮-এর অগাস্টে প্রথম পড়তে আমেরিকায় আসি, এখন ২০১৯! নতুনদেরই তো আসলে এই বিষয়ে লেখার কথা। লিখছেও। গ্রুপে প্রায়ই দেখি "এই বছর আরো 'এতো জন' বাইরে এসেছে",   "অমুক প্রফেসর নতুন স্টুডেন্ট নিচ্ছেন, আগ্রহীরা যোগাযোগ করো" টাইপ পোস্ট। আর পোস্ট গুলো দেখতে আসলেই খুব ভালো লাগে। এর পর আর কী আর উৎসাহ দিবো?

একটু ভাবার পরে মনে হলো, কী কী কারণে বাইরে পড়তে আসা উচিত -সেটার চেয়ে বরং কী কী বাধার (?) কারণে বাইরে আসতে লোকজন ভয় পায় - সেটা নিয়েই লেখি। অন্তত আমি নিজে যেসব বাধা পেরিয়েই এসেছি, সেসব লিখি। সেই লেখা পড়ে জুনিয়রদের কেউ যদি উৎসাহী হয় - খারাপ কী ? প্রশ্ন- উত্তর আকারেই লিখছি:

১. বাইরে পড়তে যাবো, আমার বা আমার পরিবারের তো এতো টাকা নেই, কী করে এতো কিছু ম্যানেজ করা সম্ভব?
আমেরিকায় পিএইচডি করতে আসলে মোটামুটি ফান্ডিং নিশ্চিত। রিসার্চ বা টিচিং এসিস্টেন্টশিপ (মাসে ১৫০০ - ১৮০০ ডলার বেতনে) দিয়েই ইউনিভার্সিটি গুলো পিএইচডি-তে এডমিশন হয়।  মাস্টার্স করতে আসলেও অনেকক্ষেত্রে ফান্ডিং জোগাড় করা সম্ভব (একটু কঠিন অবশ্য)। ফান্ডিং হলে, আসার সময়  ২ - ৩ হাজার ডলার সাথে নিয়ে আসলে (শুরুতেই বেতন দিবে না।তাই,  বাসা ভাড়া, খাবার, হেলথ ইন্সুরেন্স, ফোন, ইন্টারনেট ইত্যাদির জন্য ডলার প্রয়োজন) বাকি সব ম্যানেজ হয়ে যাবে।  

২. GRE, TOEFL এইগুলো অনেক কঠিন। আমাকে দিয়ে হবে না। সময়ই পাই না, পড়বো কখন? ভালো স্কোর না হলে তো রেজিস্ট্রেশনের পুরা টাকাটাই নষ্ট।   
কঠিন কিছুটা তো বটেই। আমেরিকানরা সবকিছুতেই একটা ছাঁকনির ব্যবস্থা রেখে দিয়েছে।  বাইরে পড়তে আসার বেলায় এই ছাঁকনিটা GRE আর TOEFL। এই একটা বাঁধা ডিঙানোর সাহস করলেই বাকিগুলো এমনিতেই হয়ে যাবে। আর কম্পিউটার সায়েন্সের জন্য, মোটামুটি রেঙ্কিং-এর একটা ইউনিভার্সিটিতে আসতে আসলে GRE -র ম্যাথ ভালো করতে পারলেই হয়। GRE English -এর স্কোর খুব ভালো না হলেও সমস্যা নেই। TOEFL -এ ভালো করলেই চলবে। আর বিশ্বাস করো,  GRE -র ম্যাথ আর TOEFL -এ ভালো করার জন্য খুব বেশি পড়তে হয় না। টাকা নষ্ট হবে না, ইনশাল্লাহ।


৩. GRE, TOEFL এইগুলোর রেজিস্ট্রেশন করতে তো ক্রেডিট কার্ড লাগে। আমার নাই। এখন কী করার আছে?
২০০৭-২০০৮ সালে, আমাদের সময় তো দেশে কোনো ক্রেডিট কার্ডই বলতে গেলে ছিল না। দেশের বাইরের আত্মীয়-স্বজন কিংবা বড় ভাই, বন্ধুরাই ভরসা ছিল। ওঁদের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেছি, আর তার সমান পরিমাণ টাকা দেশে তাঁদের কাউকে দিয়ে দিয়েছি। এখন ডিপার্টমেন্টের সিনিয়ররাই কমপক্ষে ১০০ জন দেশের বাইরে আছে, যাঁরা প্রায়ই দেশে টাকা পাঠান। গ্রুপে একটা "হেল্প চাই" পোস্ট দিলে আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি, কেউ না কেউ রেজিস্ট্রেশনের ফি খুশি হয়েই ক্রেডিট কার্ড দিয়ে দিবে। টাকাটা তাদের কথামতো তাদের বাসায় গিয়ে দিয়ে আসলেই হয়ে যাবে।  বাকিতে বা ধীরে ধীরে শোধ করতে চাইলেও সম্ভব।  আওয়াজ দিয়েই দেখো না।

৪. আমার সিজিপিএ অনেক কম।  আমাকে কী এডমিশন দিবে?
ভাইরে! তোমাদের তো তাও সিজিপিএ আছে। আমাদের সময় ক্লাস সিস্টেম ছিলো, তাও আবার ৬০% + হলেই  ফার্স্ট ক্লাস। হাতে গোনা কয়েকজন বাদে কেউই ৮০% মার্ক্স্ পেতো না।  সিজিপিএ সিস্টেমে তো তা 'B' - ও না। আমার মনে আছে, হায়দার স্যার আমার জন্য লেখা তাঁর রেকমেন্ডেশন লেটারে ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করে দিয়েছিলেন যাতে শুরুতেই বাদ না পড়ি। সুতরাং, সিজিপিএ অবশ্যই জরুরি, কিন্তু খারাপ হয়েছে বলেই যে এডমিশন হবে না - সেটা পুরোপুরিই ভুল ধারণা। GRE (ম্যাথ), TOEFL আর ভালো SOP (স্টেটমেন্ট অফ পারপাস) থাকলে এডমিশন হবে, চিন্তার কোনো কারণ নেই। 

৫. অনার্সে আমার কোনো রিসার্চ পাবলিকেশন নাই।  পিএইচডি তে কী আমাকে নিবে?
আমারও ছিল না। আমার পরিচিত আমাদের ব্যাচের যারাই পিএইচডি করতে আমেরিকায় আসছে (প্রায় ১৫-১৬ জন), ২-১ জন বস বাদে কারোরই আন্ডারগ্রেডে কোনো পাবলিকেশন ছিল না।  সুতরাং, পাবলিকেশন ছাড়া পিএইচডি এডমিশন হবে না - এইটা একটা ফালতু কথা।

৬. কোন কোন ইউনিভার্সিতে এপ্লাই করবো, ভাই? এতো ঝামেলা !
এইটা ভালো প্রশ্ন।  আমি মোট ৫ তা ইউনিভার্সিতে করেছিলাম। ২ টা টপ ইউনিভার্সিতে, ২ টা মিডিয়াম লেভেলের,  আরেকটা একদম নিচের রাঙ্কিং ইউনিভার্সিটিতে। ডিপার্টমেন্টের ৫ম ব্যাচের বড় ভাই,  শিশির ভাইয়ের (উনার ফেসবুক প্রোফাইল লিংক পাচ্ছি না!) কাছ থেকে পাওয়া আইডিয়াটা ছিল এই রকম:  টপ গুলোতে ভাগ্য ভালো থাকলে লেগে গেলে তো কথাই নেই, মিডিয়াম গুলোতে এডমিশন হওয়া উচিত। আর কোনোটাতে না হলে নিচের লেভেলেরটাতে হবেই।  আমার মোট ৪ টা ইউনিভার্সিতে পার্শিয়াল কিংবা ফুল ফান্ডিং সহ এডমিশন হয়েছিল।  আমি খুঁজে খুঁজে বাংলাদেশী আছে এমন ইউনিভার্সিটিতে এপ্লাই করেছিলাম। এখন তো ডিপার্মেন্টের ফেসবুক গ্রুপে একটা "কে কই আছেন ভাই?" - টাইপ হেল্প পোস্ট করলেই সব জানা যাবে।

৭. প্রফেসরকে খুঁজবো কিভাবে ? মাথা নষ্ট অবস্থা।  
খোঁজার আসলে দরকার নাই। তুমি নিজে রিসার্চ টপিক নিয়ে খুব বেশি চুজি না হলে, প্রফেসরদের আগে থেকেই নক করার দরকার নাই।  প্রফেসররাই স্টুডেন্ট খুজঁতে থাকে। ইউনিভার্সিটি গুলোতে এপ্লাই করে তারপর প্রফেসরদেরকে নক দিয়ে বলা উচিৎ: "আপনার ইউনিভার্সিটিতে এপলাই করেছি, সুযোগ হলে আমার এপ্লিকেশন প্যাকেজটা দেখবেন। আপনার সাথে রিসার্চ করতে আমি আগ্রহী" - কাজ হয়ে যাবে।

৮. ডিপার্টমেন্ট থেকে পাস করেছি অনেক বছর হয়ে গেলো, অনেকদিনের গ্যাপ। এখন কী আর পিএইচডি করতে বাইরে আসার সময় আছে??
হুম। গ্যাপ বেশি হলে সমস্যা।  কিন্তু এই গ্যাপে যদি তুমি কম্পিউটার সায়েন্স রিলেটেড জব করে থাকো, তাইলে আসলে সমস্যা নাই।  ইন্ডাস্ট্রি তে কাজ করে পরে পিএইচডি তে এডমিশন নিয়ে ডিগ্রী করেছে, এমন লোক অনেক আছে।  আমাদের ব্যাচেরই এক ফ্রেন্ড পাশ করার প্রায় ৭-৮ বছর পর পিএইচডি করতে আমেরিকাতে (ফান্ডিং সহ) এই কয়েকদিন আগেই এসেছে।  পিএইচডি করার আসলে বয়স নাই।  ইচ্ছা আর খাটার সাহস থাকলেই হয়।  কারো কাছে একবার শুনেছিলাম, পিএইচডি করতে ১০% মেধা আর ৯০% খাটুনি করার প্রয়োজন। কথাটা আমি বিশ্বাস করি।

৯. অপ্প্লিকেশন থেকে শুরু করে এডমিশন - শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তো অনেক স্টেপস।  কোনটার পর যে কোনটা করবো বুঝতেসি না।  
২০০৯ -এর দিকে দেশে গিয়ে ফারহান ভাইয়ের রিকোয়েস্টে ডিপার্টেমেন্টে বাইরে পড়তে আসার উপর একটা ওয়ার্কশপ করেছিলাম।  স্টেপ-বাই-স্টেপ প্রসেসটার উপর একটা স্লাইড বানিয়েছিলাম। দেখতে পারো। এই লিংকে পাওয়া যাবে।

১০. আমি দেশ ছাড়তে চাই না। দেশেই থাকবো।  
খুব ভালো কথা। বিশ্বাস করো আমারও এখন পর্যন্ত দেশে ফেরার ইচ্ছা। দেখা যাক কী হয়।  কিন্তু প্রত্যেকের একবারের জন্য হলেও দেশের বাইরে আসা উচিত। আর পড়তে আসলে ডিগ্ৰীর বাইরেও অনেক কিছু শেখার আছে। নিজের থেকে ভিন্ন মত, ধর্ম, চেহারা, কালচারের মানুষের সাথে মিশলে অনেক কিছু শেখার আছে।  মানুষকে মানুষের সম্মান দেয়া, নিজের বর্ণবাদী মানসিকতার পরিবর্তনে,  নিজের কাজ নিজে করা, কোনো কাজকেই ছোট করে না দেখা সহ অনেক বিষয় আছে, যেগুলো আমেরিকায় না আসলে আমি কোনোদিনও হয়তো শিখতাম না। বিদেশে ডিগ্রী শেষ করে দেশে ফিরে গেছে  - আমাদের ডিপার্টমেন্টেরই সিনিয়র - জুনিয়র এমন অনেকেই আছে। কাজেই, ঐসব চিন্তা ছাড়ো, বাইরে পড়তে আসো, প্লিজ।

১১. আমি খুব সাধারণ মানের ছাত্র/ছাত্রী। আমি কী পারবো?

পারবা। দেশে আমরা অনেক বাধা- বিপত্তি পার করেই পড়াশুনা করি। আমরা নিজেরাও হয়তো জানি না যে আমরা একেকজন কত বড় ফাইটার। আর বাইরের পড়াশুনা (কোর্স ওয়ার্ক) আসলেই অনেক সহজ। না, আমি মোটেও বাড়িয়ে বলছি না। হয়তো কিছু ব্যতিক্রম আছে। কিন্তু সাধারণত আসলেও অনেক সহজ। বিশ্বাস না হলে বাইরে পড়ছে - এমন কাউকে জিজ্ঞেস করে দেখতে পারো।

১২. এডমিশন হয়েছে ভাই, আমেরিকায় আসার সময় সাথে কী কী আনা উচিৎ? কালচারাল ডিফারেন্স বা শক সামলাতে পারবো তো ?
এইটা আসলে কোনো আসল প্রশ্ন না।  কেউ কোনোদিন আমাকে করেও নাই।  কিন্তু এই দুই টপিকের উপর দুইটা ব্লগ পোস্ট লিখেছিলাম অনেক আগে। এই চান্সে নিজের ব্লগের এডভার্টাইস করে ফেললাম আর কি  :)   কী কী সাথে আনা উচিৎ সেটা এই লিংকে পাওয়া যাবে।  আর কালচারাল ব্যাপারটা জানতে এই লিংকের পোস্টটা পড়ে দেখতে পারো।

আজকে এই পর্যন্তই।  অন্য কোনো পয়েন্ট মনে পড়লে বা কেউ কিছু জিজ্ঞেস করলে পরে নিচে যোগ করে দিবো।  দোয়ায় রাইখো ভাই!

--ইশতিয়াক। ৭ম ব্যাচ, সি এস ই ডি ইউ
  

কাজের জায়গায় ভুল থেকে শেখা: regex 'র একটা খুব কমন বিষয় যেটা এতদিন ভুল জানতাম

কাজের জায়গায় ভুল থেকে শেখা: regex 'র একটা খুব কমন বিষয় যেটা এতদিন ভুল জানতাম  ৩ ফেব্রুয়ারি, শনিবার, ২০২৪ রেগুলার এক্সপ্রেশন (Regular Exp...